Wednesday, February 21, 2018

অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা শিবিরের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

ব্যাক্তিগত প্রতিবেদনঃবুধবার ২১/২/২০১৮খ্রিঃ



২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সাথী শাখা এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অথিতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা শিবিরের সম্মানিত সেক্রেটারী আশরাফ উদ্দীন।বাংলা ভাষার গুরুত্বের পাশাপাশি ছাত্রদেরকে কুরআনের শিক্ষায় নিজেকে আলিকত করে সকল প্রকার অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি।সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌর শাখার সভাপতি হিফজুর রহমান এবং বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সাথীশাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারী মনির হোসাইন প্রমূখ।
আলোচনা পর্ব শেষে অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদে  মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন নেতৃবৃন্দ।



Tuesday, February 20, 2018

আগাছা

                পাণ্ডুলিপি
 
(আমারও কিছু বলার অধিকার আছে)
             [মনির হোসাইন]


প্রার্থনা বাণী
মনির হোসাইন___
তোমার নামে শুরু ওগো প্রশংসিত দয়াময়,
তোমার তরে সব কিছুগো মন করে দাও
আলোময়
প্রশংসা ঐ তোমার নামে হে রহিম
রহমান,
সব মসীময় দীপ্ত করে দাও করে দাও
শোভমান।
তামসিকতা দূর করে দাও দাও ছড়িয়ে
সেই আলো
যেই আলোতে প্রজ্জ্বলিত হবে সকল
জমকালো।
দাও করে দাও দিব্যি ক্ষমা দিও না গো
ভর্ৎসনা,
তোমার দ্বারে হাত পেতেছি রিক্ত
হস্তে দিও না।
আমার দেশের কুলি মজুর আর অসহায়দের
কষ্ট,
বৃথাজল করো না গো তুমি করে দিও না
নষ্ট।
আমার দেশের শাসিত ভূমিতে ভরে দাও
যত পূণ্য,
যেন এ দেশের বুকে বাঁচি আর মরি করে
দাও তুমি ধন্য।
পৃথিবীর যত কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে
করো চুরমার
এই রণ-ভূমে তুমি আমাদের করো অকুতোভয়
দুর্বার।
রাত্রি নিশিতে নির্ভয়ে পথ পাড়ি
দিতে যেন পারি,
আঁধার পথের বাঁকে বাঁকে যেন দীপ্তি
ছড়াতে পারি।
কৃষকের গোলা ধানে ভরে দাও পুকুর ভরো
মাছে,
অন্ন বস্রে মেরো না মোদের মিনতি
তোমার কাছে।
শুকনো বনের শুষ্ক লতা-গুল্ম করে দাও
সবুজাভ,
দরিয়াগুলো ভরে দাও জলে করে দাও
নিষ্পাপ।
বারোদের ধোঁয়া দুর করে দিয়ে বায়ু
করো বিশুদ্ধ,
জলে স্থলের লাশের বহর করে দাও
অবরুদ্ধ।
আকাশের সব দরোজা খোলে দাও যত
পারো,
জমিনের মত ধৈর্য মোদের দিয়ে দাও
আরো আরো
বাংলা ভারত সীমান্ত পাড়ে উত্তর
দিগন্তে,
শৌর্য-বীর্য দাও হে প্রভু বিজয় যুঝে
আন্তে।
"হেরা পর্বতঘেরা এ তাহিরপুর মক্কার মত
প্রান্তর।
এখানে দাও দীপ্ত অাভা থাকুক
যুগযুগান্তর।


এসো স্বপ্ন দেখি
মনির হোসাইন
____________________
ঘুমিয়ে নয় সজাগ হয়ে স্বপ্ন দেখতে হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
আসারে সব গল্প ছেড়ে বাস্তব হতে হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
তোমার আমার স্বপ্নগুলো শুভ্র হতে হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
সেই স্বপ্নগুলো সুদূরপ্রসারী হতে হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
এই স্বপ্নগুলো মনের মধ্যে লালন করতে
হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
এ দেশকে নিয়ে তোমার আমার স্বপ্ন
দেখতে হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
এ বিশ্বকে নিয়েও তোমার আমার স্বপ্ন
দেখতে হবে
এসো স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে তোমার আমার মুক্তি
হতে পারে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্নটা আজ আমজনতার কাণ্ডারী
হতে পারে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে তারুণ্যকে গড়ে তোলা
যাবে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে জালিমের কণ্ঠ রোধা
যাবে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে নতুন সমাজ গড়ে তোলা
যাবে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে জীবন গুলো সুন্দর করা
যাবে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে আশা নিয়য়ে বেঁচে
থাকা যাবে
সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন দিয়ে সংসারকে উজ্জ্বল করা
যাবে
এসো সেই স্বপ্ন দেখি।
যে স্বপ্ন নেবে তোমায় আমায় দূর আরও
বহু দূর
সে স্বপ্ন হবে সত্য
যদি তোমার আমার স্বপ্ন হয় একি সুরে
সুরাসুর।



নাম দিয়ে কী হয়?
__মনির হোসাইন__
সুহেল তোমার নাম
নাম দিয়ে তো হয় না কিছু
কাজের বড় দাম।
যদি রাখো আবুবকর
উমর উসমান আলী,
কর্ম যদি না হয় ভাল
সবই খালি খালি।
নারায়ণ আর অরুণ কুমার
যতই তারে ডাকো,
সত্য যদি না পায় খোঁজে
সফল হবে না কো।
সুন্দর সুন্দর নামের হিড়িক
পড়ছে আজি দেখো,
কাজের বেলায় পুকুর চুরি
সাবধানে ভাই থেকো।
মীরজাফরের নামটা কি ভাই
খুবি খারাপ হলো?
কাজের তরে সুন্দর নামও
আজকে সেটা কালো।
বাহির তোমার যেমন তেমন
ভিতর হলে সাদা,
কর্ম তোমার হলে ভাল
লাগবে না কো কাদা।
জন্ম তোমার হোক না যেথায়
কর্ম হলে ভাল,
রাখবে তোমায় মাথায় তুলে
নাম ছড়াবে আলো।



যুবাদের বলছি
মনির হোসাইন___
তুমি কি কখনো শুনতে পাও না কান
পেতে জীমূতেন্দ্র?
প্রস্তুতি নাও আগে,
তুমি শুনতে পাও কি শত্রুদেরই ঘোড়ার
খুড়ের মন্দ্র?
রাতের জোনাকিরা জাগে।
তুমি কি দেখতে পাও না ঐ জালিমের
অত্যাচার?
অসহায় মানবতা,
তুমি কি শুনতে পাও না মজলুমেরই
চিৎকার?
তবু কেন নিরবতা?
তুমি কি দেখো না বর্গীরা সব দিচ্ছে
হানা?
অমানিশা এলো নেমে,
তুমি কি কখনো আহত পাখির শোক
দেখো না?
নিমগ্ন কেন ঘুমে?
তুমি কি এখনো জাগতে পারোনি
বুড়িগঙ্গার তীরে?
ডাকেনি তোমায় কেউ?
তুমি কি কখনো জাগবে না ঐ অাঁধারের
বুক চিরে,
ভেঙ্গে উত্তাল ঢেউ?
ভোর হতে সব পাখিরা জাগে জাগো না
কেন তুমি?
মিনারের সুর ডাকে।
জালিমের আগুনে পুড়ে হলো ছাই সোনার
জন্মভূমি,
দৈত্যের হাকডাকে।
মনে কি পড়ে না তায়েফের কথা বদরের
প্রান্তর,
খোলাফায়ে রাশেদ্বীন?
পদে পদে যারা লভেছিলো বিজয় আহবে
যুগযুগান্তর,
বাজায়ে মুক্তিবীণ।
তুমি কি শুনোনি খালিদ বিন ওয়ালিদের
বীরত্ব গাঁথা বাণী?
আর এখনো কি জানতে পারোনি
আবুবকরের
মহাত্যাগ কুরবানী?
পড়েছ কি তুমি নজরুলেরই বিদ্রোহী কথা,
গান,
তিতুঁর সংগ্রামী জীবন?
তুমি কি সেই মীরজাফরকে চেনোনি
এখনো?
জানোনি অম্রকানন?
তুমি কি এখনো ঘুমে?খুলেনি তোমার
চোখ?
উঠো ঘোষণা দাও,
হে যুবক তুমি বলো আমি এসে গেছি
আলো হয়ে।
কালো হাত ভেঙ্গে দাও।



দুঃখী প্রবীণ
মনির হোসাই__
সেই দিন শনিবার হাটে
সবজি মহল বটে!
সেইখানে ছিলাম দাঁড়িয়ে
আমগুলোর দিকে তাকিয়ে।
এক প্রবীণ বয়সী সুধায়,
"সাত টাকা দিয়ে আম চাই
অভিলাস জেগেছে চিত্তে
একটি আম দাও বটে।"
সেই দিন শনিবার হাটে।
"শুধু একটি দাও দয়া করে
দু'হাত পেতে রবের দরবারে
করবো দোয়া তোমাদের তরে
কলিজাটা আমার ভরে।"
কাকুতি মিনতি করতেছে কত
দু'হাত পেতে দুঃখীদের মত,
দেখতেছে লোকে চোখ মেলে
আর কান পেতে সব শুনে,
কাঁদতেছে সেই প্রবীণ বয়সী
সাত টাকা গুনে গুনে।
বিক্রেতা বলে, ছলে কৌশলে,
"নাও বেটা বুড়ো পাঁচ টাকা পেলে?
চা-পান খিলো গিয়ে,
কেজির দরে আম বিকিই আমি
সাত টাকা এলো নিয়ে!
"আমের তো আমার গাছ নেই বেটা
ক্রয় করে করি বিক্রি,
যা বেটা বুড়ো তোর কাছ থেকে
সাত টাকা পেলে লাভ কি?"
পরিশেষে বুড়ো ব্যার্থ হয়ে
চলতেছে পথ হেঁটে,
তবুও একটি আম তার
নিষ্ঠুর ললাটে না জোটে।
সেই দিন শনিবার হাটে।
কিছুক্ষণ পরে আম ক্রয় করে
বুড়োর সামনে গেলাম,
দেখি এক পাশে জলে চোখ ভাসে
আমখানা হাতে দিলাম।
অমনি দেখি মুখখানা তার
ঝলসে উঠে তখন,
বলতেছে উনি,"দেখলিনে বাবা
নিষ্ঠুর তারা কেমন?"
আমি বললাম,দেখেছি চাচা
এক্ষুনি যান ঘরে।
তখন দেখি প্রফুল্লে তার
মনটা গেল ভরে।
যখন তিনি আম চেয়েছিল
জানিনে কত ব্যাথা পেয়েছিল
ব্যার্থ বুড়োর বুকে।
সেই দিন শনিবার হাটে।
(রচনাকালঃ২০১২,রমজান মাস,শনিবার)



আগাছা
মনির হোসাইন___
আমার এক খণ্ড জমি
তাতেই করেছি চাষ
রোপন করেছি ধানের চারা মিটিয়ে
মনের আশ।
সকালের কুয়াশা মাখা রোদ হেলান
দিয়ে শুয়ে পড়েছে আমার জমির উপর।
আমি শূন্য পদে হেঁটেই চলেছি তার
চারপাশে।
সেই কবে যে সেচ দিয়েছিলুম,
চারদিক যেন ভরে গিয়েছে ঘাসে।
বাহ! কী চমৎকার!না চাইতেই এত ঘাস
মনোরম!
আমি বিস্ফারিত চোখে চেয়ে আছি
অবিরাম।
না পরিচর্যা করেছি,না সার দিয়েছি
তাতে,
কিন্তু জমিতে ঘাসের সমাহার,
নয়ন ভরিয়ে দিয়েছে আমার।
তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি,এগুলো
থাকবে।
কারণ, আমি ধ্বংসে বিশ্বাসী নয়,
আমি সহাবস্থানে বিশ্বাসী,
আমি খুব উদার মনের মানুষ।
তাই থাকুক না এগুলো যেমনি আছে
তেমনি।
ফুলে ফলে পল্লবে সুশুভিত হবে আমার
জমি।
সেচ দিয়েছি পর্যাপ্ত,সারও দিয়েছি।
পরিচর্যার কোন অভাব রাখিনি তাতে।
সবার ক্ষেতের ধান কাটা হল সারা,
আমার ক্ষেতে কালকে যাবো ভেবে
রেখেছি রাতে।
সকালে কাস্তে হাতে দাঁড়িয়ে জমির
পাশে,
দেখি ঘাসগুলো সব মাথা উচু করে
দাঁড়িয়ে,
আমার দিকে চেয়ে খিল খিল করে
হাসে।
পোকারা ঝাকে ঝাকে এসে ঝাপিয়ে
পড়েছে,
কিন্তু ঘাসের উপর নয়,আমার ফসলের
উপর।
প্রতিটি ধান গাছ পোকার হামলায়
আক্রান্ত।
শুধু বৃন্তে রয়ে গেল ধানের চোঁচা,
আমার মাথায় হাত অবশেষে,
আমি কাল মনে করে অকালে এসেছি
দেখেছি সর্বনেশে।
আজ বুঝতে পেরেছি আমি
আগাছা কেউ রোপে না জমির 'পরে,
কেউ পোষে না তাদের পানি সার
দিয়ে,
ফসলের মত যত্ন করে তুলে না কারো
ঘরে।
আমি সমাজের দিকে চেয়ে চেয়ে ছাড়ি
হতাশার নিশ্বাস,
ভাবি এমন অসংখ্য আগাছা মানবতা আর
সমাজ করছে গ্রাস।
(রচানাকালঃ১/১১/১৭ ইং)



রাগ করো না মা
মনির হোসাইন__
রাগ করো না মা গো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে,
ফুলের মত হাসো তুমি
তোমার হাসি ফুলে ফুলে।
মধুর কথা বল তুমি
মিষ্টি গলার সুর,
আমি তোমার কথা স্মরণ করি
গেলেও বহুদূর।
তোমার কথা শুনলে পরে
মনটা ভরে কোলাহলে।
রাগ করো না মা গো তুমি
কখা বলো মুখটি খুলে।।
ছোট্ট বেলায় রঙ্গ খেলায়
ঘর বানাতাম মাটির ঢেলায়
মা গো মা ডাক ছাড়লে পরে
আদর করে নিতে কোলে।
রাগ করো না মা গো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে।
কর্দমাক্ত কলেবরে
আমায় তুমি দেখলে পরে
খোকা বলে ডাক দিতে মা
শান্ত হতাম চুমু খেলে।
রাগ করো না মাগো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে।
আমায় যখন আদর করে
ঘুম পাড়াতে তোমার কোলে
আমার তখন ঘুম আসতো
শান্ত মাথায় ঢুলে ঢুলে।
রাগ করো না মাগো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে।
এই যে মা,হাসলাম আমি
হাসবে না আর পরাণ খোলে?
একটু হাসো, হাসো না মা
একটু তাকাও চোখটি খোলে।
রাগ করো না মা গো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে।
সকল কাজ তো শেষ হলো মা
তবুও কেন মুখ ঢাকলে?
তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে
এই যে দেখ তোমার ছেলে।
রাগ করো না মা গো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে।
আমি যখন ছোট্ট ছিলাম
ছোট্ট ঘরে ঢোকেছিলাম
তোমায় দেখবো বলে,
শুনি আমার জন্য করছো দোয়া
তোমার দু'হাত তুলে।
রাগ করো না মাগো তুমি
কথা বলো মুখটি খুলে।
ফুলের মত হাসো তুমি
তোমার হাসি ফুলে ফুলে।
(রচনাকালঃ১৪ ফেব্রুয়ারী-২০১২ ইং)



সত্যের ডাক
মনির হোসাইন___
হরে দাও তামসিকতা
ছিড়ে দাও শক্ত নিগড়
এনে দাও ভোরের আভা
জ্বালিয়ে দাও দিবাকর।
শুন ঐ মিনারের সুর
হেরার ঐ দৈব বাণী
হে যুবক দাও পাড়ি দূর
এনে দাও দীপ্তিখানি
অযথা গল্প ছাড়ো
সত্যের উত্থান ঘটাও
ইতিহাস খুলে পড়ো
মিথ্যার পতন ঘটাও।
করো না রোনাজারি
বুকেতে সাহস জমাও
হরে দাও আহাজারি
সত্যের শত্রু হটাও।
পা বাড়াও পূণ্য পথে
সুপথে হও আগুয়ান
বিদুষী যাক নিপাতে
রিপুর হোক অবসান।
পাড়ি দাও সপ্ত সিন্ধু
রচো বিজয়ের গান
এনে দাও ভানু-ইন্দু
হবে কেন পেরেশান?
যে রবি অস্তমিত
সে রবি দাও ফিরিয়ে
করো না স্থগিত
সংগ্রাম যাও চালিয়ে।
নিতুই সে রাত্রি আসে
দিনের এক অবসানে
আবারও প্রভাত হাসে
অন্ধকার যায় পিছনে।
সেই কথা মনের কোণে
পোষে নাও যতন করে
আশার ঐ স্বপ্ন বোনে
অবিরল যাও লড়ে।
(রচনাকালঃ১৯-৫-'১৬,
রাত ১২:৮মিনিট)



বরষা ও কৃষক
মনির হোসাইন__
অবিরাম বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
সোনালি রোদ হেসে যায় মেঘের ফাঁকে
খেঁকশিয়ালের বিয়ে যেন ভরদুপুর।
রিমঝিম বৃষ্টি পড়ে টিনের চালে
সহসা বিজলীবাতি বজ্রপাতে
স্তব্ধ আকাশ এই পৃথিবী শব্দ হলে।
অবিরাম বৃষ্টি ধারায় রহম ঝরে
বাদলার দিবসযামী গগণ কালো
রবির ঐ মুচকি হাসি পরান ভরে।
সহসা দমকা হাওয়া কাঁপিয়ে বাড়ি
চারদিক শন শন মাতিয়ে তোলে
ভায়ানক বজ্রনিনাদ আকাশ ভারী।
আবার ঐ আকাশ বাতাস শান্ত হয়ে
বিচরণ হিমেল বায়ুর চতুর্দিকে
গগণের মেঘ-বৃষ্টি দেয় তারায়ে।
কৃষাণের চোখ চলে যায় দূর অজানায়
জীর্ণ গাভী এড়ে বাছুর আসল না কি?
উদাসী খোঁজবে এখন কোন ঠিকানায়?
কি হবে মাঠের ফসল গেল সবি
পহাড়ি ঢল নেমেছে দু'কূল ছেপে
জানে না অতি পানির কোন সে দাবী!
বানানো কলাগাছের ভেলায় চড়ে
দেখতে যায় মৎস্যখামার ডুবলো না কি?
দেখা যায় পানির ধারা উপচে পড়ে।
কৃষকের চোখ কপালে উঠলো গিয়ে
জানে না কোন পাপের মাশুল এসব
ভিটে মাটি নিচ্ছে কেন সব ছিনিয়ে(?)
(রচনাকালঃ১৮/৫/১৬)


১০
ভয় করি না
মনির হোসাইন____
ভয় করিনা বুলেট কামান ভয় করি না
পুলিশ,
ভয় করিনা ফাঁসির দড়ি ভয় করি না
শালিশ।
ভয় করিনা অত্যাচারী কোর্ট-কাচারী
জর্জ,
সত্য পথে জীবন দেব উদার মনে কর্জ।
ভয় করিনা মন্ত্রী-এমপি অত্যাচারী
বাদশাহর,
ভয় করিনা বহ্নিতাপ ধার ধারি না
লালসার।
ভয় করিনা ধর-পাকর আর ভয় করি না রক্ত,
ভয় করিনা শিকল-কড়া ও অন্ধাকারের
গর্ত।
ভয় করিনা সন্ত্রাসীদের হাতের নগ্ন
তলোয়ার
ভয় করিনা লৌহ কপাট আর দগ্ধ
অগ্নিদ্বার।
ভয় করিনা হুমকি ধমকি চোখ পাকানো
দৃশ্য
ধার ধারিনা ভিটে মাটির যদিও করে
নিঃস্ব।
ভয় করিনা রক্তচক্ষু আর হায়েনাদের
থাবা
ভয় করিনা আজদাহা রূপ আসুক বিঘ্ন
বাধা।


১১
আমি তোমার প্রতীক্ষায়
মনির হোসাইন__

এই সন্ধার গুটি গুটি বৃষ্টি ভেজা বাতাসে
তোমার অমিয় কথাটি আজও মনে পড়ে
আমার।
এই জীবমন্দিরে স্পর্শ করে বলেছিলে
আমায়,
'বন্ধু, তোমাকে খুব ভালবাসি।'
জীবিকার তাগিদে আজ দু'জন দু'জনার
থেকে দূরে,
কিন্তু তোমার এই মহান কথাটি চির
জায়গা করে নিয়েছে আমার হৃদয়
মন্দিরে।
আমি তর্ষিত ছিলাম হে-প্রিয়তম
তুমি এসে প্রশমিলে আমির হৃদয়ে
প্রবাহিত যাতনা।
সন্ধ্যা থেকে গহীন রাত অবধি
সেই ঝলসানো চাঁদের জ্যোৎস্না মাখা
রাতে
কী গল্প হয়েছিলো মনে আছে তোমার?
তোমাকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে
কেঁদেছিলাম আমি
আর বলেছিলাম,ভুলে যেও না বন্ধু।
শত বেদনার ঢেউ যখন আচড়ে পরে আমার
বুকের কিনারায়,
একের পর এক উপকূল ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়,
তখন শুধু তোমার নিঃস্বার্থ
ভালবাসাটাই আমার বুকে চরের মত
জেগে রয়।
বিলের ধারে প্রস্ফুটিত পদ্মটিকে
ইশারা করে বলেছিলে তুমি,
ভালবাসা ফুলের চেয়েও অমলিন।
যা কখনো ঝরে পরে না,শুকিয়েও যায় না
কভু
চির সবুজ হয়ে বেঁচে থাকে চিরদিন।
হে প্রিয় তোমার আমার ভালবাসা
অম্লান।
আজ তোমাকে খুব প্রয়োজন এই
আঙ্গিনায়।
তুমি এসো হে-প্রিয় হাতে রেখে হাত
এসো পথ চলি দু'জনে মাড়িয়ে ব্যাথাতুর
ধূসর পাহাড়।
আমার প্রতিটি প্রহর তোমার
প্রতিক্ষায়।
তুমি এসো হে -প্রিয়।
(রচনাকালঃ১৭/১১/২০১৭ ইং)


১২
প্রাণের ত্যাগে অর্জিত
মনির হোসাইন__

আমার দেশ তোমার দেশ
রক্তে কেনা বাংলাদেশ
সবুজ ঘেরা সতেজ ভূমি
লক্ষ প্রাণের ত্যাগের দেশ
বাংলাদেশ।
শুনতে বড়ই ইচ্ছে লাগে
চিত্তকোণে সাহস জাগে
একাত্তরের সেই কাহিনী
যশোগাথা সবিশেষ
বাংলাদেশ।
আজ হয়েছি মুক্ত আমরা
মুক্ত জাতি স্বধীন বেশ
স্বাধীনতার গর্ব করি
গর্ব আশার নেই কো শেষ
বাংলাদেশ।
পাঠ করেছি সব জেনেছি
স্বাধীনতার ইতিহাস
সব গেঁথেছি মনের মাঝে
সতেজ প্রাণে সবুজ দেশ
বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা আনলো যারা
জীবনটাকে করলো শেষ
লিখতে আমি ভয় করি না
নেইকো আমার ক্লান্তি ক্লেশ
বাংলাদেশ।
জয় বাংলা জয় বাংলা
করো সবে শোরআওয়াজ
লাল সবুজের শ্লোগান ধরো
গর্জে উঠো আমার দেশ
বাংলাদেশ।
রচনাকালঃ৩/৫/২০q১১ ইং


১৩
নিশাপতির ভালবাসা
মনির হোসাইন
_____________
__এই শুনছ কথা?
"শুনছি।তবে রাগ করবো বললে যা তা।"
__কেনো? কেনো?
"যদি তুমি অস্তিত্বে মোর আঘাত হানো।"
__না, না।ভাল কথা বলবো আমি তোমায়
ভালবাসি
তার চেয়েও আমি খুশি হবো একটু দিলে
হাসি।
"হ্যা,প্রতিদিনই তো আমার দেওয়া
হাসির ঝলক দেখো,
আর চুমে যাওয়া তোমার ললাট আমার
আলোই মাখো।"
__ও, তাই!
তাহলে শুন,ভালবাসা বুঝ তুমি?
"হ্যা,ভালবাসা বুঝি বলেই পরাণ খুলে
হাসি,
আর বস্তি-পল্লী জোছনা দ্বারা ছড়াই
রাশি রাশি।
__দেখছ না মোর ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক
হয়েছে বড়
তাই আমায় তুমি ভালবেসে একটু প্রবেশ
করো।
"হ্যা,করবো।তবে অপেক্ষার প্রহর গুণতে
থাক।
ভালবেসে বুকের 'পরে আশার আকাশ
আঁক।"
__বাহ!কী সুন্দর মন্ত্রণা
তোমাকে ভালবেসে স্বপ্ন হলো বোনা।
"এই,আজকে তুমি ঘুমোতে যাও কালকে
হবে দেখা,
গল্প হবে নিঝুম রাতে হরেক রকম শেখা।"
__ধন্যবাদ তোমাকে হে- নিশাপতি।
(রচনাকালঃ২২/১১/১৭ ইং)


১৪
বর্ষার রূপ
মনির হোসাইন
_________________
বর্ষা কালে মেঘলাকাশে
মেঘের বিচি ভাসে,
সহসাতে ঝাপটা কেটে
সোনার রবি হাসে।
যে আকাশে কালো মেঘের
তরঙ্গেরই মেলা,
সেই আকাশে ভেসে বেড়ায়
ঐ মেঘেরই ভেলা।
গুড়ুম গুড়ুম ধ্বণি উঠে
ঝিলিক-মিলিক বাতি,
হঠাৎ আবার দমকা হাওয়া
কাঁপিয়ে তুলে মাটি।
রাস্তাগুলো কাদা দিয়ে
পিছলা হয়ে থাকে,
নীলাকাশে হঠাৎ আবার
রংধনুটাও আঁকে।
বিন্দু বিন্দু জলের ফোটা
ঝুমুর পায়ে নাচে,
কৃষাণ মনে সন্দেহটা
যায় অবিরাম রচে।


১৫
ঐশীবাণী লাগবে
__মনির হোসাইন___
সোনালি স্বপ্ন ভেঙে দিও নাকো
জাগ্রত কর বন্ধু
এই স্বপ্নগুলোই আগলে রেখেছে মহা
সমুদ্র সিন্ধু।
পা ফেলে ফেলে হাটবারকালে পাতার
মরমর শুনি
ঘামের প্রতি ফোটা এনে দেয় বিজয়ের
শুভবাণী।
নদীর কলকল ধ্বণি শুনে বুঝতে পেরেছি
আজ
ডানাকাটা পাখি উড়বে আকাশে সকাল
দুপুর সাঁজ।
বাতাসের শনশন আওয়াজ কানে কানে
যায় বলে
আমার স্বপ্ন না কি সতই হবে ধৈর্যটাকে
লভিলে।
আকাশের দিকে চেয়ে দেখি কালো
মেঘ গেছে সব কেটে
জোছনার ছায়া লুুটোপুুটি খায় আমার
চাহনি দেখে।
ভোরের সূর্য এক গাল হেসে বলে
দিয়েছে আমায়
আঁধার রাত্রি আলোকিত হতে থাকবে না
অন্তরায়।
পৃথিবীর বুকে নেমে আসবে কবুতরদের
ঝাক
মুছে দেবে সব কালিমা যত হতভাগা
নির্বাক।
এই বিশাল পাহাড় কেঁদে মোরে হাত
বাড়িয়ে বলে
'নিয়ে যাবো সব বর্জমালা ভাসিয়ে
চোখের জলে।'
এই আশ্বাস পেয়ে এগিয়ে আমি নদীর
পাড়ে গেলাম
নদী বলে 'সব ধুয়ে নাও তুমি বারি সব
দিয়ে দিলাম।'
আরে মনের কালি যায় কি ধুয়া পানির
ছিটা দিলে
লাগবে সেথায় ঐশী বাণী দেখ না
কেতাব খুলে।


১৬
এসো জমি খুড়ে দেখি
__মনির হোসাইন__

হামহামিয়া পল্বলে পানি প্রয়োজন
সকলেই করিবে জমি ঝাড়িয়া উঠিল
শরীর।
আনিবেই পানি নদীতীর কাটিয়া
রোপিবে ধান ফসলি জমিতে বহুশ্রম
খাটিয়া।
এহেন সংকল্পে খন্তি কুদাল হাতে,
ভজন আর ভোজন শেষে ছুটিল প্রভাতে।
সভা করিল সভাপতি কাটিতে হইবে খাল,
দিন কয়েক লাগিবে তবুও চলিবে না
গোলমাল।
"ঠিক আছে মশাই" এই বলিয়া কুদাল
চালায় জোরে,
দিবাগত না হইতে খাল হইল পানিতে
গেল ভরে।
প্রফুল্লে সব আত্মহারা মিষ্টি করিল
বন্টন,
দু'হাত বাড়ায়ে বলিল,
প্রভু বিনাশ করিও না মোদের এ
আকিঞ্চন।
গিরিসম সব টিলা কাটিয়া পানি
বহালো খালে,
বক্ষে বহালো আগামী বার্তা জন একতার
বলে।
যে মাটি ছিল অঘোর আর শ্বসল রোদ্ধ
চৌচির করা,
ফের আসিল সজিবতা নদী প্রান্তর পাড়ি
দিয়া
সুশীতল ধারা।
আমার গ্রামের মানুষেরা সব মুক্ত উদার
মনে,
লাঙ্গল জোয়াল কাঁধে ফেলিয়া সুমিত্র
বন্ধনে,
ছুটিলো সবাই নিজ ভূমিতে চাষ করিল
জমি,
ধানের সবুজ পাতা গজালো জড়তার
অবসানে।
শ্বসল ভূমি আমার গ্রামের হামহামিয়া
পল্বলে,
শুভিত হইল বিস্তীর্ণ মাঠ সতেজ সবুজ
কল্লোলে।
বহু ক্লেশ আর শ্রমের ফলে সোনা ফলিল
ক্ষেত্রে,
যেন প্রান্তরে সোনা ছিটানো ঝলমল
চাহনি কৃষকের নেত্রে।
চলিল কৃষানেরা কাস্তে দড়ি হাতে,
সোনার ফসল তুলিল ঘরে মররিবে না আর
ভাতে।
ভবঘুরে আছে যাহারা হাতে হাত
রাখিয়া সবে,
যদি আসে এক কাতারে জঠর জ্বালা
ঘুচিবে
বজ্রমুঠে লাঙ্গল টেটে দাড়ালে
দেশহীতে।
(রচনাকালঃ২০১৩)


১৭
নিষ্ঠুর মহাকাল
মনির হোসাইন__

ক্ষুদ্র বাতায়নে
আকাশ পানে চেয়ে ভাবছি একা একা
আনমনে।
কারো সাথে নেই ঝগড়া বিবাদ নেই মন
কষাকষি,
আমি চেয়েছি হতে সবার সাথে সরল
মিতভাষী।
মৃত্যু দূর্ভেদ্য অনিবার্য সবার তরে
দুর্বোধ্য এই মৃত্যু প্রাণ সংহার করে।
মহাকাল যদি গ্রাস করে মোরে হামলা
করে প্রাণে,
আমি নশ্বর থাকবো না ভবে তাই পরাভব
এই রণে।
শুধু থাকবে আমার সৃজন করা কথামালা সব
কর্ম।
যা সংগ্রামীদের পাথেয় যোগাবে
তাতেই আমিধন্য।
মাটিতে বসে বসে
তন্ময়ে ভাবছি মোর সমাধি হবে
মাটিতেই অবশেষে
মহাকাল শ্রোতে জীবন যৌবন ভেসে
যায় যদি যাক
রেখে যেতে চাই সোনার ফসল
কথামালা নির্বাক।
জীবনের এই ক্ষুদ্র গণ্ডি পেরিয়ে
যেতে না পেরে রিক্ত হস্তে দাঁড়িয়ে,
ভাবি পৃথিবীর সব দেখা হয়নি জানা
হয়নি কিছু
তবুও আমি ছুটে চলেছি মহা সত্যের পিছু
পিছু।
সত্যই মোরে মুক্তি দেবে যদি লালন
করতে পারি,
আমি সত্য ছাড়া চারপাশে মোর মহা
শুণ্যতা হেরি।


১৮
কেমন মানুষ চাই?
মনির হোসাইন___

আমি এমন মানুষ চাই
যারা দেশের জন্য লড়বে
আর হবে না কভু লম্পট,
যারা হবে দেশের ভবিষ্যৎ
আর দেশের জনসম্পদ।
যারা অন্ধকারে রবে না
যাবে আলোর মাশাল জ্বালিয়ে,
যারা জনতার তরে অকাতরে দেবে
জান-মাল সব বিলিয়ে।
যারা কথা বলবে কোমল হৃদয়ে
শান্তির বাণী শুনাবে,
যারা শত্রুর সাথে ঝুযবে
আর বিজয় ঝিনিয়ে আনবে।
যারা টাকার গরমে দুঃখীদের সাথে
করবে না অনাচার,
আর নারীমত নিয়ে হোটেলে হোটেলে
করবে না পাপাচার।
যারা টাকার কাছে হবে না বিক্রি
হবে না কোন পণ্য,
আর অশ্লীলতাকে দেবে না স্বাগত
করবে না কভূ গণ্য।
যারা লুটপাট করে খাবে না কভু
অসহায়দের মাল,
আর বোমা হামলায় উঠবে না মেতে,
করবে না গোলমাল।
যারা সন্ত্রাসী হয়ে সন্ত্রস্ত
করবে না সাধারণে,
যারা জনগণকে দেবে না কষ্ট,
হয়রানি অকারণে।
যারা পৃথিবীর বুকে দম্ভ করে
হাটবে না কোন সময়,
আর ক্ষমতার জোরে মসনদ কভূ
হবে নাকো বিষাদময়।
যারা অন্যায় জেনে জালিমের সাথে
করবে না বাজে চুক্তি,
আর দেশকে দেবে না রসাতলে
তারা করবে না তাকে ভক্তি।
যারা অন্যায়টুকু দেখলে চোখে
প্রতিবাদটুকু করবেই,
আর রিপুর সাথে মুকাবেলা করে
শেষাবধি তারা লড়বেই।
আমি এমন মানুষ চাই।
(রচনাকালঃ১৪/৪/১৬ খ্রিঃ)


১৯
ষোলতে আমার বিজয়
মনির হোসাইন____

(প্রতিযোগীতার জন্য)
ছাব্বিশে মোর ঝাঁপিয়ে পড়া ষোলতে
আমার বিজয়
রাঙা রক্তে রাজপথ গড়া ষোলতেই
আমার পরিচয়।
ছাব্বিশে মোর মহা চিৎকারে পৃথিবী
দিলাম কাঁপিয়ে
আর ষোলতে আমার আত্মপ্রকাশ বিজয়
বার্তা নিয়ে।
আমার লাখো সন্তানের রক্তে ভেজা
সবুজ সতেজ প্রান্তর
সেই বিজয় উল্লাসে নেচে ওঠে দেখ
লক্ষ কোটি অন্তর।
তুমি মানচিত্রে চেয়ে দেখ আজ
বাংলাদেশর নাম
আমার সন্তানেরা লাল রক্তে লিখেছে
সেই নাম।
আমি বহুকাল ধরে রাজপথ হেটে ষোলতে
এসে বিজয়
থামেনি এখনো পথ চলা আমি করি না
কখনো ভয়।
আমার কোলে বেড়ে ওঠা শুন
মুক্তিকামীর দল,
ষোলতে বিজয় তবু কেন আজও মার খায়
দুর্বল?
আমি ছোট বড় ও কালো আর ধলো সবকে
সমান বুঝি,
শত্রুর সাথে মুকাবেলা করে সকলে সমান
ঝুযি।
আমি ষোলকে নিয়েই পথ চলি আর
সংগ্রাম করা স্বভাব,
তবু কেন আজ ঘরে বাইরে বিজয়ের এত
অভাব(?)
আমার কোলে বেড়ে ওঠা
শুন,কচিকাচাদের দল,
ষোলকে নিয়ে নব উদ্যমে ছুটে চল ছুটে
চল।
হে -শিশু কিশোর আর আবাল বৃদ্ধ জেনে
রাখ নিশ্চয়,
কোন শুকুনের থাবা ভয় পাই না।কারণ,
ষোলতে আমার বিজয়।
(রচনা কালঃ১৬/১২/২০১৭)


২০
ষোল আমি তোমাকে বলছি
মনির হোসাইন_____

ষোল, তুমি যতটা গর্জে উঠেছিলে ততটা
বর্ষাতে পারোনি।
তোমাকে অস্বীকার করার মত কোন পথ
নেই।
কিন্তু বিজয়কে নিয়ে খুবি সন্দিহান।
তুমি বাংলাকে নিয়ে এসেছ ঠিক,
কিন্তু বিজয়কে তুমি বহুদূরে ফেলে
এসেছ।
প্রতিটি বছর এগারোটি মাস প্রতীক্ষার
পর
তুমি এসে বাঙ্গালির দোরগোড়ায়
হাজির হও।
আজও তুমি এসেছ!
আসো, দেখ তোমার বিজয়ের দিনেও
আজ আমি মুখ খুলে কথা বলতে পারি না।
তুমি আসো,আমার ঘরে আসো।
এসে দেখে যাও এখানে বিজয়ের চিহ্ন
মাত্র নেই।
তুমি স্বাধীনতাকে আহ্বান কররেছিলে।
তোমার আহ্বানে সে সাড়াও দিয়েছিল।
কিন্তু জানো কি,
আজ বাক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করে
দেওয়া হয়েছে?
তুমি জানো কি,
গণতন্ত্রকে আজ ধনতন্ত্রে রুপান্তরিত
করা হয়েছে?
তুমি তো জানো শেখ মুজিবুর রহমানকে,
তুমি আরো জানো,
জিয়াউর রহমান,আতাউল গণি
উসমানীকেউ।
নাম না জানা আরও অগণিত মানুষকে
তুমি জানো।
তাদের রক্তের উপর দিয়ে তুমি হেটে
এসেছ।
তুমি তাও জানো।
তবে জানো না, আজ তোমাকে পঙ্গু করা
হয়েছে।
তোমাকে নির্জীব করে দেওয়া হয়েছে
বিষাক্ত ক্ষমতার রোষানলে।
শুন,
আমার এই লেখনি,বজ্রকণ্ঠের
হুংকার,আগুনের স্ফুলিঙের মত বক্তব্য
এ সব কিছুই আজ ক্ষমতার সামনে
নিষ্প্রভ।
তাই শুন,
এ জাতি তোমাকে আরও একবার দেখতে
চায়।
দিকবিদিক দামামা বাজিয়ে তুমি
আবার এসো
এই সবুজ প্রন্তরে।
কিন্তু সাবধান,
সেই সবুজ প্রান্তরে আরেকটি দ্বিতীয়
লাল বৃত্ত এঁকে দিও না।
বরং সবুজকে আরো সতেজ করে দিও।
হে - ষোল,
আমি তোমার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছি।
আপছা আলোতে তোমার একটি ঝলক
দেখার প্রতীক্ষা করছি আমি।
তুমি আরও একবার এসো,
ফুলের ঝুড়ি ভরে বিজয়ের মালা গেঁথে
রাখবো আমি।
তুমি এসো তুমি এসো তুমি এসো
আরেকবার বিজয়কে সাথে নিয়ে।
(রচনাকালঃ১৬/১২/১৭ খ্রিঃ)



২১
হিসাব করেছ?
মনির হোসাইন
_______________________________________
জন্মের পরে নব জিন্দেগি সন্তর্পনে
সম্ভার
প্রৌঢ়ে যখন পা বাড়াবে উঠবে জীবন
ঝংকার।
ধীরে ধীরে সব নিত্যক্রিয়া সন্তর্পনে
নিঃশেষ
মৃত্তিকালয়ে শুইবে তুমি রাখো তাতে
বিশ্বেস।
পরজনমে জন্মিবে তুমি হিসাব দেবার
কালে
রম্য কর্মে ধন্যিত হবে নয়তোবা
রোষানলে।
ধীরে ধীরে সব হিসাব কার্য সন্তর্পনে
নিঃশেষ
প্রতি কর্মের ফল পাবে থাকবেনা কোন
ভাগশেষ।
স্বর্গ কিংবা নরক পাবে কর্মেই তার
ফল
জোড়দার নাই ধূর্ততা নাই কর্মই তার
বল
অতএব
অন্তর করো অম্লান,করো সুন্দর, করো
নির্মল
জিন্দেগী করো বিন্যাস, গড়ো শান্তি
কর উজ্জ্বল।
সুন্দর করো সামাজিকতা কণ্ঠ করো না
দূর্বল
রীতিনীতি করো সত্যনিষ্ঠ আত্মাকে
করো বীরবল।


২২
হে কবি অস্ত্র ধর
মনির হোসাইন
_______________________________
পড় পড় কুরআন পড় জ্ঞানার্জন কর
সত্যের পক্ষপাতে মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়
পরাধীনের শিকল ছিড়ে মুক্ত ঘোড়ায় চড়
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।
দুষ্টমতির চক্রাকারে ঘুরিস না তুই আর
অত্যাচারের প্রতিরোধে ঠোঁট দু'টো
তোর নাড়
কথা বল শক্ত করে বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ কর
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।
পা চাটা গোলাম হয়ে লাভ কি হবে
তোর?
যদি মানবতা অভিশাপ দেয় মৃত্যু হওয়ার
পর!
মরতে হলে সত্য পথে কলমযুদ্ধেই মর
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।
ন্যায়ের পথে কর্ম করে জীবনটাকে ধন্য
কর
নিন্দুকদের নিন্দা শোনে কান না দিয়ে
ধৈর্য ধর
আর কিচ্ছু না থাকলেও কলমটাকেই অস্ত্র
কর
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।
ভয় পাইস না জ্ঞানের কিতাব খুলে পড়
ভুলে যাইস না বাতিল কিন্তু শক্তিধর
আলয়ে তোর আসতেও পারে ঘুর্ণিঝড়
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।
নৈতিকতা শালিন করে বিদ্বেষী দ্বার
বদ্ধ কর
মুক্ত আকাশ মুক্ত বায়ু পৃথিবীতে রচনা কর
অনিষ্ট আর পারবে নাতো সুবহে শাম
ধৈর্য ধর
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।
মিথ্যা যত কথামালা বাক্যবানে ধ্বংস
কর
ভেঙে লৌহকপাট ছিড়ে দে শক্ত নিগড়
হরে দে ঘৃণ্যাপবাদ বিজয়ের গুজব কর
হে কবি বীর বাহাদুর অস্ত্র ধর।


২৩
সাহসী বীরের পথচলা
মনির হোসাইন__
________________________
এখানেই তুমি থমকে যেও না
হয়তো বা ফের পেয়েছ আলো
সংগ্রামে কিন্তু ভয় পেয়ো না।
রাস্তা তোমার সোজা হতে পারে
পিচ্ছিল কিন্তু ভুলে যেয়ো না
রিপুদের যৌথ হামলা হতে পারে
সংকল্প কখনো দুর্বল করো না।
সাথীরা থাকবে না কেউ পাশে
একাকিত্ব দুর্বিষহ লাগতে পারে
ভেবো না পথ চলো নির্ভয়ে
সাহসী বীরের পথচলা থামে না।
জানো কি তুমি পাখিদের পথচলা?
রোজবিহানে খালিপেটে বের হয়ে
সাঁঝের বেলা ভরা পেটে ফেরে
নীড়ে।
তাই অর্থাভাবে ঘাবড়ে যেয়ো না।
পিঁপড়েরা সব অবিরাম করে কর্ম
মাকড়সারা শূন্যে বাঁধে বাসা
ক্লান্ত তাদের নাগাল পায় না কভূ
এসব দেখে তুমি কেন পারবে না?


২৪
জালিমের সাজা
মনির হোসাইন__
____________________________________
শিয়াল পণ্ডিত মন্ত্রীমশাই সিংহ বনের রাজা
কারো কোনো গোস্তাকীতে দেয়
যে শক্ত সাজা।
সিংহী হলো রাজার রাণী রাজার কাছেই থাকে
বানর হলো প্রধান উজির গাছের ডালে নাচে।
হরিণ রাজার কর্মচারী থাকে ঝোপের ঘরে
যখন যা আজ্ঞা আসে তখন সে তা করে।
মন্ত্রীমশাই সারাদিনের খাটনি খেটে যা আনে
সর্বশেষে হিসাব মিলায় সিংহ রাজার কানে কানে।
রাজার দেয়া আদেশমত প্রধান উজির রাস্তা গুনে
সিংহী রাণীর যা ইচ্ছা করে বসে ঘরের
কোণে।
রাজার যত প্রজা ছিল সবাই ছিল শান্ত
প্রজাদের সেবার কাজে রাজা হতো ক্লান্ত।
ওর অভিযোগ তার অভিযোগ সব দিত সে
মিটিয়ে
যার যতটা পাও না হতো আচ্ছা করে পিটিয়ে।
সহসাতে রাজার মন উল্টো হলো কেন(?)
কত প্রজা চিবিয়ে খায় শাস্তি দেয় হেন!
তাই না দেখে প্রধান উজির ধারে কাছে
ঘেসে না
মন্ত্রীমশাই হিসাব দিতো এখন সে আর
আসে না।
হরিণটাকে বলল রাজা,'আমার বাড়ির ভোজ করে
এ যাবৎ তুই করলিটা কি রয়েই গেলি আঁটকুড়ে।
কিন্তু তোকে দেখতে লাগে নাদুসনুদুস
মোটা তাজা
এখন তোকে ধরে খাবো সর্বশেষে
তোর এই সাজা।
যেমনি রাজা ঝাঁপিয়ে পড়ে হরিণটার উপরে
অমনি করে ধূর্ত হরিণ পালায় প্রাণের ডরে।
সেই হরিণের পিছু পিছু ছুট দিয়েছে সিংহ রাজা
হোচট খেয়ে গর্তে পড়ে সিংহ পেল বড়
সাজা।
শিক্ষা এবার কেমন হলো গর্তের মাঝে
পড়ে!
জালিম যদি হয়রে কেউ এমনি করেই মরে।
(রচনাকালঃ১২/৩/২০১২ খ্রি)


২৫
গ্রামের কথা বলছি
মনির হোসাইন___
______________________________
গ্রামের নাম লামাকাটা এখানেই থাকি
নানা রঙের পেন্সিলেতে দেশের ছবি
আঁকি।
খেটে খাওয়া মানুষগুলো সকাল দুপুর সাঁজে
ক্ষেত খামারে ব্যস্ত থাকে নানা রকম কাজে।
কেউ চলে যায় কাঠ কাটতে কেউ বা চলে
ক্ষেতে
কেউ বসে যায় দোকান মেলে ঘরে
ফেরে রাতে।
কেউ চলে যায় মাটি কাটা কেউ বা টানে পাথর
কেউ বা করে কয়লা কেরিং ময়লা ভরা গতর।
কেউ বা থাকে বিদেশ গিয়ে টাকা পাঠায়
দেশে
দু'চার বছর থেকে আবার ফেরত অবশেষে।
কেউ বা আবার বই গুছিয়ে কলম নিয়ে হাতে
পাঠশালাতে ব্যাস্ত থাকে শেষে খেলার
মাঠে।
ও পাড়ার ঐ ছোট্ট লাবু ছাগল চড়ায় মাঠে
মিঁঞা বাড়ির নব বধু ঘটি নিয়ে ঘাটে........।
কেউ বসে দেয় মাথার বিলি কেউ বা উড়ায় ধান
আমার গ্রামের এমন ছবি দেখলে জুড়ায় প্রাণ।
কোথাও আছে ছোট লেক কোথাও
আছে পাহাড়
কোথাও আবার গন্ধে ভরা ফুল পাখিদের বাহার।
কোথাও আছে নদী- নালা পাহাড় থেকে
বেয়ে
আমার গ্রামের বুক ছুয়ে যায় বৈঠা নাড়ে
নেয়ে।
গ্রামের জেলে কালাম মিয়া কালা মিয়া ভাই
ডিঙা নিয়ে মাছ ধরতে হাওড় পাড়ে যায়।
আব্বু আমার নিতুই শ্রমিক কাজ করে যা পায়
খরচপাতি সব মিলিয়ে দিনকাল চলে যায়।
সারাদিনের কষ্ট রাতে বাইরে ফেলে
রেখে
গ্রামের মানুষ জীবন নিয়ে সুখ-দুখেতেই
থাকে।
যেথায় আছে হাওড় বাওড় আছে অনাবিল সুখ
পাখি ডাকা স্নিগ্ধ সকাল হরে যায় সব দুখ।
আজানের সুরে মুখরিত হয় গ্রামের চারি পাশ
নিতে পারে সব মানুষে বুক ভরে নিঃশ্বাস।
আমার গ্রামের এমন ছবি দেখতে যদি চাও
নেমন্তন্য রইল তবে দল বেঁধে সব আও।
(রচনাকালঃ১৯/১২/১৭ খ্রিঃ)


২৬
মানুষের জন্যই মানুষ
মনির হোসাইন__
______________________________
হঠাৎ রাজু বাইরে যাবে ঘুম থেকে সে
জেগে
ছিটকিনিটা আস্তে করে খুলল দ্রুত বেগে।
শীতের রাতে অন্ধকারে কোথায় যাবে
সে(?)
এ পাশ থেকে একলা আমি ভাবছি বসে বসে।
যাওয়ার সময় হাতে দেখি পূরনো একটি কম্বল
রাতের বেলা ঘুমাতো সে যা ছিল তার সম্বল।
আরেক হাতে একটি চাদর একটি বালিশ নিয়ে
দ্রুত বেগে বেরিয়ে গেল পেছন দরজা
দিয়ে।
কৌতুহলে আমিও উঠে তার পেছনে হাটি
গিয়ে দেখি বাঁশ বাগানে জোনাকিদের ঘাটি।
বাঁশ বাগানের রাস্তা ধরে পূর্ব দিকে ঘুরে
ইয়া বড় তেঁতুল গাছ এক দাড়িয়ে মাথার 'পরে।
হঠাৎ শোনি কান্না কিসের গুনগুনানি শব্দ
একটু সামনে এগিয়ে দেখে হয়ে গেলাম
স্তব্দ।
আদুল গায়ে একটি পাগল ধুলায় মেখে শুয়ে
তীব্র শীতে কাপছে দেহ কানছে
গুনগুনিয়ে।
কিন্তু আমি চুপ করে তাই দেখছি নয়ন মেলে
রাজু এসে দাড়িয়ে গেল তেঁতুল গাছের
তলে।
ধানের খেড়ের উপর দিলো চাদরটা বিছিয়ে
বালিশ দিলো মাথার নিচে কোমল হাত বুলিয়ে।
অনেক বড় কম্বলটাকে দু'ভাজ করে ধরে
জড়িয়ে দিলো গায়ের উপর মন মমতায় ভরে।
আরাম পেয়ে ঘুমিয়ে গেল সেই অসহায়
পাগল
তাই না দেখে ভেঙে গেল আমার
চোখের আগল।
অশ্রু মুছে রাজুর আগেই ঘরে ফিরে গেলাম
সকালবেলা ঘুমতে উঠে রাজুকে না পেলাম।
একটু পরেই নামাজ শেষে রাজু এলো ঘরে
রাতের কথা জিজ্ঞাসিতেই অন্য কথা ধরে।
বুঝতে পারি গোপন সেবা আল্লাহই তা
জানোক
করতে হবে মানব সেবা সকলেই তা
মানোক।
(রচনাকালঃ২৪.১২.১৭ খ্রি)


২৭
হাওড় পাড়ের কৃষক
মনির হোসাইন__
_________________________
আমি এক কৃষকের কথা বলছি
কেউ চিনতে পেরেছ তাকে?
ছেঁড়া লুঙ্গি আর কাদা মাখা শরীর নিয়ে
সারা মাঠ চষে বেড়ান যিনি।
লাঙ্গলের ফলা দিয়ে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে,
পানি ঢেলে জমিতে সজিবতা আনেন যিনি।
কেউ চিনতে পেরেছ তাকে?
লাঙ্গল, জোয়াল, কোদাল যার অস্ত্র
যিনি মাটিকে কাদাময় করে তুলেন।
কনকনে শীতের সাথে যুদ্ধ করে
ভোর না হতেই মাঠে চলে যান যিনি।
কেউ চিনতে পেরেছ তাকে?
রোদ বৃষ্টি পারে না কখনো দমাতে,
ফসলি জমিতে অবিরাম যার সাধনা।
যার হাতের ছোঁয়ায় স্বসলরোদ্ধ জমি
ফিরে পায় ব্যাঞ্জনা।
দেহের রক্তকে পানি করে দিয়ে ফসল
ফলান যিনি।
কেউ চিনতে পেরেছ তাকে?
অতি বৃষ্টি আর অনাবৃষ্টিতে নিরব চিৎকার করেন
যিনি।
কখনো কখনো নিষ্পেষিত হন শক্তিধরের
হাতে।
আর কখনো যার ঘুম আসে না নিরব নিস্তব্দ
রাতে।
কখনো অনাহারে আর অর্ধাহারে দিনাতিপাত
করেন যিনি।
তিনিতো এই হাওড় পাড়ের কৃষক।
চিনতে পেরেছ তাকে?



২৮
ক্ষমা করো হে প্রভু
__________________
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।
কবর দেশে শুইতে গিয়ে যখন আমি ঠেকবো ওগো
সে দিন তুমি পাশে থেকো সহজ করিও কঠিন পারাপার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

আমলনামা গুনতে গিয়ে যখন আমি ঠেকবো ওগো
সে দিন তুমি খুশি থেকো করিয়ে দিও নবীর দিদার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

পুলসিরাতের পাড়ে গিয়ে যখন আমি ঠেকবো ওগো
সে দিন তুমি ক্ষমা করিও পাই যেন গো তোমার দিদার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

তোমার দেওয়া বিধানমত আমি চলিনা কখনো অবিরত
আমি খোঁজিনি তাদের করেছে যারা তোমার পথে দীপ্ত অঙ্গীকার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

এখন সকাল সাঝে খোঁজেফিরি তোমায় দাও মুক্তি।
আমি নিশাচর হয়ে খোঁজে বেড়াই এক পুষ্পিত মহাকান্তার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

আমি আর পৃথিবীর পথে হতে চাই না লাঞ্চিত অপমানিত।
ভালবেসে কাছে টেনে নাও অনুতপ্ত আমি বান্দা তোমার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

আমি কত কর্ম পেছনে ফেলে বলেছি করবো আগামীকাল।
অবহেলাই কেটে গেল দিন কোনো কর্মই হয়নি আমার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

আমি ব্যর্থ আজ কাঁদছি বসে দিবসের শেষবেলায়।
তাই মিনতি করি মুছে দাও পাপ রহমত দাও তোমার।
ক্ষমা করো হে প্রভু আমার আমি গুনাহগার তুমি গাফ্ফার।

(রচনাকালঃ১২/৬/২০১২ খ্রি)



২৯
আমারও কিছু বলার অধিকার আছে
মনির হোসাইন___

তোমারা স্বাধীনতার মানে ভুলে গেছ অাজ।
তোমরা রক্তচুষার দল।
পৃথিবীতে যত ঘটেছে ধ্বংসলীলা,
এ সব তোমাদের কর্মফল।
আমি মুখ খুলে আজ বলতে পারি না কথা,
বিদ্রোহী হয়ে উঠেছি তোমাদের কাছে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার অাছে।

শান্তি শান্তি জপমালা করে লাভ কি?
যদি সংগোপনে সন্ত্রাসী পায় মুক্তি।
কত ভক্তির খেলা তোমাদের দরবারে।
আমি ভক্তি করতে জানি না করি শ্রদ্ধা।
এটাই আমার গোস্তাকী তোমাদের কাছে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার অাছে।

আজ সারা দুনিয়া মেতে উঠেছে যৌনাচারের মেলায়,
পর্ণগ্রাফিতে অর্থের খেলা আছ ধ্বংসের ভেলায়।
পাশ্চাত্যকে আমদানী করেছ যারা,
নারী মুক্তির নামে আজ দিশেহারা।
অশ্লীলতাকে অবিরত করো অাহ্বান।
অন্ধকারে নর্তকীরা নাচে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার অাছে।

গুম খুন আর অত্যাচারের কথা
নির্ভয়ে আজ বলতে পারি না এসব
ক্ষমতা,অর্থ ভগবান নির্মাতা।
আজ পৃথিবীতে তোমরা ভগবান সেজে
করছো পৃথিবী শাসন,
সত্যের উপর অাবরণ ফেলে মিথ্যাকে করো বরণ।
আমি মুখ কিংবা কলম দিয়ে বলতে গেলে সেসব
চোখ রাঙিয়ে মামলা হামলা করো আমার পিছে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার অাছে।

অফিস আদালত ঘুষের অাড্ডাখানা।
ভালবাসা আজ টাকার হাটের পণ্য।
দুর্নীতিবাজ সমাজে সনামধন্য।
আজ সমাজের প্রতিটি উপাদান অর্ধনিহত হয়ে
যন্ত্রণাতে গড়াগড়ি খায় অ-শিব গড়ল পিয়ে।
এ সব নিয়ে যদি বলি আমি "জেগে ওঠো হে তরুণ।"
রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় আমি হয়ে যেতে পারি খুন।
তাছাড়াও আমি হয়ে যাই আজ জঙ্গি তোমার কাছে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার অাছে।

আজ পানির ট্যাংকে গলিত লাশের গন্ধ
কাটাতারে ঝুলে ফেলানির মত লাশ
এবং রাস্তা ব্রীজে রডের বদলে বাঁশ
এ জাতির আজ হয়েছে কপাল মন্দ।
সমাজপতিরা মসনদে বসে হাসে
সমাজটা আজ যক্ষ্মার কাশি কাশে।
দুনিয়াটা আজ সাজিয়েছ তোমরা
জুলুমবাজের ধাঁচে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার অছে।

কোটি কোটি টাকা মেরে খাও
মারো জনতার বুকে লাথি,
বলতে পারে না মুখ খুলে কিছু
ফেঁটে যায় তার ছাতি।
মুখ ফোটেনা বুক ফাঁটে তার নিরব নিস্তব্দ আর্তনাদে।
ক্রন্দনরোলে ধ্বনিত হয় পৃথিবীর আকাশ বাতাস।
মানবতা আজ মরতে বসেছে অন্ধকারের কূপে।
বলি না এসব। কি জানি কি বলে ফেলে কেউ পাছে।
অামারও যে বিছু বলার অধিকার অাছে।

কিন্তু বোবা শয়তান হতে চাই না আমি
মুখ বুজে আর থাকতে পারি না কভু।
চোখ বুজে আর কাউকে মানি না প্রভু।
আমি নজরুল হয়ে ভগবান বুকে এঁকে দেব পদচিহ্ন,
তার মত আমি স্রষ্টা সূদন শোক তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করবো ভিন্ন।
ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে
কবি ফররুখের একুশ শতকের পাঞ্জেরী
আহ্বান করি জেগে ওঠো বীর বেশে।
ছড়িয়ে পড়ো দিগন্তজুড়ে,
প্রতিজ্ঞা করো সারা দুনিয়ার কাছে।
আমারও যে কিছু বলার অধিকার আছে।

(রচনাকালঃ২৮/১২/২০১৭ খ্রি)



৩০
এসো এক হই
_______________
পিছনে আলেয়া সম্মুখে আলো
এসো এক হই কালো আর ধলো
মুছু দেই যত অসমতা সব
মাখিয়ে যাবক আনি সুমাধব।
ধোঁয়ার পিছে না লুকিয়ে ভাই
মানব জাতি এক হয়ে যাই।
পৃথিবীর বুকে স্বর্গ রচি
নরক থেকে সকলে বাঁচি।
ভেদাভেদ দাও জলাঞ্জলি
এক বলে তব সবাই বলী।
খোঁজে দেখ সব ধর্মতত্ত্ব
সবখানেই এক মহাসত্য।
আমরা মানুষ এক মহাকূল
এক স্রষ্টায় আছে নির্ভুল।
এক অধিবাসে সবাই লালিত
এক স্তন্যে সকলেই পালিত।
তবে কেন আজ ভিন্নমতে
লড়ছে সবাই ভিন্ন পথে?
চন্দ্র সূর্য এক যদি হয়
এক হতে সবে কেন মহাভয়?
পৃথিবীতে দেখ মানবতা আজ
ধ্বংস্তুপে পায় মহালাজ।
মানব জাতি ভ্রান্তির পথে
ধুলো উড়িয়ে চলছে রথে।
তবুও আশায় বুক বাঁধি আমি
গ্রহণ করো হে অন্তর্যামী।
মুছে দাও যত দুর্বিপাক
মানব জাতি মুক্তি পাক।

রচনাকালঃ২৫/১২/১৭ খ্রিঃ




৩১
অরুণ প্রাতের তরুনদল
মনির হোসাইন
_______________
দিকে দিকে দিচ্ছে সাড়া ছাত্র জোয়াড় জাগলো আজ
রোখবে কে আর এমন জোয়াড় পূর্বাকাশে রঙ্গিন সাজ।
নিভু নিভু লণ্ঠণে আজ প্রজ্জ্বলিত সূর্যটা
দিচ্ছে উঁকি মারবে ঝুকি করবে আদায় কার্যটা।
রফিকরা আজ দিচ্ছে হানা অবৈধদের প্রান্তরে
ঢেউ খেলে যায় পতন ঢেউ জুলুমবাজের অন্তরে।
ইচ্ছেরা আজ করলো ঝুটি ঝাক বেঁধেছে রাজপথে
মন্ত্রী এমপির বৈধতা নেই আটকে দিলো মাঝপথে।
গাড়ির নিচে হাত পা গেলো, গেলো মাথা গেলো প্রাণ
মন্ত্রীমশায় উঠলো হেসে কতটা নির্লজ্জ প্রাণ!
বিচার চাই বিচার হবে আদর্শবান মনন্ত্রী চাই
তার পূর্বে বৈধ গাড়ির নিরাপদ এক সড়ক চাই।
মায়ের কথা রাখতে আমি নিরাপদে পৌছতে চাই
গাড়ির ভেতর বৈধ সীলের আদর্শবান চালক চাই।
বিদ্রোহী সব নজরুলেরা একই স্লোগান একসাথে
আমার ভাইয়ের রক্ত কেন শুষ্ক হবে রাজপথে?
চাকার নিচে চ্যাপ্টা মানুষ রাক্ষুসে যান নিচ্ছে প্রাণ
লাশের বহর থামবে কবে আর কতটা দিলে প্রাণ?
উন্নয়নের মহাসড়ক! নৈতিকতার হচ্ছে লীন
রাজনীতিতে দুর্নীতিবাজ দিনে দিনে বাড়ছে ঋণ।
তাই দিকে দিকে দে রোখে দে অবৈধদের আস্তানা
রক্তখেকু মানুষগুলোর দে ভেঙ্গে দে কারখানা।
জেলের ভয় আর জালের ভয় বুলেট বোমা মানি না
গুলির মুখে বুক পেতে দে কাউকে এখন চিনি না।
ছয়চল্লিশ বছর গেলো সংস্কারের নাম দিয়ে
ছাত্রসমাজ করবে এখন নিজের জীবন জান দিয়ে।
হতে পারেন সহযোগী নয় তো আপনি সরে যান
বাংলাদেশের সংস্কারে ছাত্রসমাজ দেবে প্রাণ।
আকাশ বাতাস উঠলো ফেঁড়ে নিরাপদ সড়ক চাই
মানুষ পিষে মরবে না তাই সৃঙ্খলার এক রাজ্য চাই।
আয় ছুটে অায় দল বিদলে ১৮ আজ দিচ্ছে ডাক
দে বাজিয়ে দুন্দুভিরে দে বাজিয়ে তবলা ঢাক।
দিকবিদিকে দে ছড়িয়ে বাঁচতে শেখার জয়ধ্বনি
দে ছড়িয়ে সত্যটাকে রোখতে শেখার  লয় বাণী।
আয় ছুটে আয় নবীন তোরা মানবতার কথা বল
অমানুষের কণ্ঠ চেপে রোধ করে দে শক্তি-বল।
জাগবে এ দেশ নতুন করে জাগবে আবার সেনাদল
আমরা যদি জাগি তবে অরুণ প্রাতের তরুণ দল।
রচনাকালঃ৩/৮/১৮


৩২
সাংবাদিক
মনির হোসাইন
_____________
ও সাংবাদিক
যদি তুমি সত্য বলো
তবেই তুমি সাংবাদিক
আর না হলে সবার কাছে
তুমি একজন সাংঘাতিক!
ও সাংবাদিক।

রক্তে যদি সত্য বাণী
প্রবাহ না বয়
কি হবে আর খবর ছেপে
জীবন নিয়ে সংসয়!
ভীত হলে চলবে নাতো
হবে সত্য পথিক।
ও সাংবাদিক।

হাটে মাঠে পথে ঘাটে
খবর যত কুড়িয়ে
দাও ছড়িয়ে দিকবিদিকে
মিথ্যাকে দাও পুড়িয়ে।
বুকে সাহস মুখে বল
হতে হবে অত্যাধিক।
ও সাংবাদিক।

ভয় পেয়ো না বৈরী হাওয়া
অস্ত্র তোমার চলবেই
ধরবে তোমার কণ্ঠ চেপে
তবু কথা বলবেই।
মনে রেখো তোমরা হলে
জাতির বিবেক সাংবাদিক।
ও সাংবাদিক।
রচনাকালঃ৯/৮/১৮


৩৩

ঈদ মোবারক
মনির হোসাইন
____________
ময়লার স্তুপের উপর বসে আছে
এক অসহায় বৃদ্ধ বাবা।
ময়লা জানে না
এখানে একজন মানুষ বসে আছে।
সারা দেহে ক্ষত।
মাছিদের ভন ভন শব্দ
বৃদ্ধের কাছে মনে হয় সুরযুক্ত গান।
দরজায় দাড়িয়ে দেখি এক বৃদ্ধা।
দুটি হাত বাড়িয়ে
এক মুঠো চালের প্রত্যাশায়।
হীন শিশুটি এক টুকরু রুটির জন্য
ডান হাত প্রসারিত করে দাড়িয়ে থাকে পাশে।
কিন্তু গলা ধাক্কা দিয়ে ওদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আমি আজ ওদেরকে জানাই
ঈদ মোবারক।
(রচনাকালঃ২১/৮/১৮ খ্রিঃ)



৩৪
ওরা ভীতুর দল
মনির হোসাইন
______________
ওরা আমাকে এত ভয় পায় কেন?
আমি তো বনের কোনো হিংস্র পশু নই।
আমি কোনো দানবও নই।
আমি এক নর মানব।
আমি মনুষ্যকুলের এক মহাসত্যভাষী।
আমি সত্যকে উদ্ভাসিত করে তুলি।
আমি মুছে দিতে চাই পৃথিবীর সমস্ত কালাকানুন।
তাই ওরাও আমাকে মুছে দিতে চায়।
আমি যে মুছে যাবার নই।
আমি ওদের হুকুমের উপর আঘাত
হানি দীর্ঘ শ্বাসে,
আমি ওদের কালো আইনের উপর
পদচিহ্ন এঁকে দেই বলে
ওরা আমাকে নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত।
ওরা আমাকে এত ভয় পায় যে,
মনের অজান্তেই বন্দুকের ট্রিগার চেপে ধরে।
আমার কোনো বন্দুক নেই।
আমার কাছে সত্য আছে।
কখনো কখনো ওরা আমার কণ্ঠনালী চেপে ধরে।
আমি তখন শ্বাসরোদ্ধকর পরিবেশে
কালো কালির অস্ত্র ধরি বলে
ওরা আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখায়।
কিন্তু পরক্ষণেই তারা আমার ভয়ে
সংকুচিত হয়ে আসে।
ওরা ভয়ংকর হায়ে না
ওদের হিংস্র থাবা
আমার রক্তে উম্নাদ এনে দেয়।
আমি ওদের ভয়ে ভীত নই।
কারণ, আমার কাছে রয়েছে মহাসত্য।
আমি নিয়মের কথা বলি
অনিয়ম ভেঙ্গে চুরমার করে দলি।
তাই ওরা আমাকে প্রচণ্ড ভয় পায়।
(রচনাকালঃ২০/৮/১৮ খ্রিঃ)


৩৫

আমরা কথা রেখেছি
মনির হোসাইন
___________
আমরা কথা রেখেছি।
আমরা ভোট ডাকাতির প্রতিরোধে
জীবন বাজি রেখে চেষ্টা করেছি।
আমরা আজ অপ্রতিরোদ্ধ।
ঠাস ঠাস গুলির শব্দে শুভ্র ধুয়াই
মিশে গিয়েছি।
আইনের রক্ষক যারা আজ,
তাদের ভক্ষকদের সাথে হাত মিলাতে দেখেছি।
অভিযোগ করতে গিয়ে
নির্বাচন কমিশনারের চেয়ার শূণ্য পেয়েছি।
আমরা আজ কথা রেখেছি।
জীবন বাজি রেখে
ভাইয়ের তাজা রক্ত দিয়েছি।
হে আল্লাহ,
অনিয়ম ঠেকাতে আমরা যা করেছি,
তোমার কাছে তার উত্তম প্রতিদান চাই।
(রচনাকালঃ৩০/৭/১৮ খ্রিঃ)

৩৬
জবাব চাই
মনির হোসাইন
______________
কি দোষ ছিলো সবুজ ভূমির
অবুঝ কিশোর রাজনের?
রক্তে কেন লাল হবে আজ
বিচার এ কোন ধরনের?
কেন? কেন?
এই দেশে কি বিচার নাই?
জবাব চাই।

জাতির বিবেক রূদ্ধ কেন
হায়েনাদের অঙ্গণে?
মানবতা আজ লুটিয়ে পড়ে
আদালতের প্রাঙ্গণে।
কেন? কেন?
এইখানে কি শান্তি নাই?
জবাব চাই।

দোষ কি ছিলো তনুর গায়,
আর ধর্ষিতা সব মা বোনের?
অশ্লীলতার পাহাড় কেন?
বেহাল দশা এই দেশের!
কেন? কেন?
এই দেশে কি মানুষ নাই?
জবাব চাই।

হাটে - মাঠে, পথে ঘাটে
গুম খুন আর অত্যাচার!
কথায় কথায় প্রহসন আর
খাতায় পাতায় মিথ্যাচার!
কেন? কেন?
এই দেশে কি আইন নাই?
জবাব চাই।

মামলা হামলায় টাকার খেলা
রাস্তা ব্রীজে দুর্নীতি,
আদর্শের এক রাজনীতি নাই
আছে শুধু পেটনীতি।
কেন? কেন?
এই দেশে কি সরকার নাই?
জবাব চাই।

দফায় দফায় ব্যাংক ডাকাতি
শেয়ার বাজার লুটতরাজ,
প্রশ্ন করলে সব ঠিক আছে!
কর্তা ব্যাক্তির ধূর্ত কাজ।
কেন? কেন?
এই জুলুমের শেষ কোথায়?
জবাব চাই।

শিক্ষা-দীক্ষায় নৈতিকতা গেল কই?
শিক্ষিতরা আজ হয়ে যায় সন্ত্রাসী!
কথায় কখায় চোখ রাঙ্গিয়ে
মঞ্চে ভাল সম্ভাষী!
কেন? কেন?
এই দেশশে কি শিক্ষা নাই?
জবাব চাই।

প্রিণ্ট মিডিয়া আর টেলিভিশণ
নিজেরর মত স্বাধীন নাই!
সাংবাদিকের সাদা কাপড়
লাল রক্তে ভিজে যায়(?)
কেন? কেন?
কথা বলার কি অধিকার নাই?
জবাব চাই।

দল-বিদলে ঝগড়া ফ্যাসাদ
মাঝখানে সব জনগণ,
পদে পদে হয়রানী হয়
নিরীহদের হয় মরণ।
কেন? কেন?
দেশ মাতাদের চিন্তা নাই?
জবাব চাই।
(২৫/৭/১৮ খ্রিঃ)


৩৭

ঈদ এলো
মনির হোসাইন
________________
রমাদ্বান চলে গেলো
ঈদ এলোরে ঈদ এলো
আজকে খুশির ঢল নেমে
আমোদ কি আর যায় থেমে?
ঝর্ণাধারা যায় বয়ে
গরীব দুঃখির গাল বেয়ে।
একটুখানি হাত বাড়ায়
পিঠের 'পরে হাত বুলায়,
দাও মুছে দাও চোখের জল,
হৃদয় জুড়ে খুশির ঢল।
(১৬/৭/১৮)

৩৮
তোমাকে মনে পড়ছে
মনির হোসাইন
___________________
আজ তোমাকে পড়ছে মনে উঠছে হৃদয় কেপে কেপে
ব্যাথার নদী বয়ছে যেন বয়ছে দেখ থেকে থেকে।

হাটে মাঠে পথে ঘাটে বাজার কিংবা সংসদে
তোমার কথায় পড়ছে মনে ইচ্ছে অবিসংবাদে।

আজ পৃথিবীর পথে পথে মজলুমানের বিরাট দল
খোঁজে ফেরে তোমার দেখা পায় না খোঁজে শক্তি বল।

ঐশী বাণী হাতে নিয়ে আলো দিলে ছড়িয়ে
পথ দেখালে মানবেরে আলোর মশাল জ্বালিয়ে।

বাইরে ঘরে অশান্তি আজ চারিদিকে নির্যাতন
অসহায়ের বন্ধু তুমি আজ তোমাকে প্রয়োজন।

আজ পৃথিবীর সর্বদেহে বিরাট ক্ষত বিপুল ব্যাথা
আজকে খোদার কাবাঘরে জালিমেরাও ঠেকায় মাথা।

নাস্তিকতায় গড়ছে জাতি গড়ছে কত অবিধান
ঘরে ঘরে থাকতে আজও পবিত্র সে আল কুরান।

হায়েনাদের আজদাহারূপ কেপে ওঠে জলস্থল
মজলুমেরা নির্যাতিত বৃথা মুছে চোখের জল।

যেথা সেথা পড়ে থাকে জোয়ান বৃদ্ধ শিশুর লাশ
রক্ত নদী সাতরে ওঠে হায়েনাদের কলোল্লাস।

আমরা জানি রাছুল তুমি আসবে না আর ভূবনে
আসতে পারে আবুবকর ওমর আলী ওসমানে।

খোদার পথের পথিক যারা ঐশী বলে বলিয়ান
চূর্ণ করে করে সব অবিধান রাখবে সেথায় আল কুরান।

রাখছে তারা জীবন বাজি করছে এমন আয়োজন
রাছুল তোমার রেখে যাওয়া পথের দিশা প্রয়োজন

রচনাকালঃ৯/১০/১৮ খ্রি


৩৯

এখনই কবিতা লিখার সময়
মনির হোসাইন
_______________
আহ্বান করি সমস্ত কবিরা এক হও প্রান্তরে
হিন্দু,মুসলিম,বোদ্ধ,খ্রিশ্চান এক হও অন্তরে।
কবিরা থাকতে এ জমিনে আজ ধর্ষিতা কেন নারী
ধর্ষিত কেন গণতন্ত্র? তর্ষিত পাঞ্জেরী!
রোখে দাড়াও রোখে দাড়াও নেই নেই কোনো ভয়
সুপ্ত হৃদয় জাগিয়ে তোল করো না কো সংশয়।
এখনই কবিত লিখার সময়।

পুষ্পশূণ্য দিগন্তে আজ শুভ্র কুহেলি ঢেকে
সুমাধব আনো সুমাধব আনো কবিদের যায় ডেকে।
তোমরা আছ আমিও আছি তোমাদের এ সারথী
ভুলে যাও সব জাত্যভিমান আমার এ পুষ্পারথী।
কবিতা লিখ কবিতা ছুড়ো জুলুম যেখানে হয়
আলেয়ার পথ ছিন্ন করে করে দাও আলোময়।
এখনই কবিতা লিখার সময়।

কবিতার আঘাতে ভণ্ডুল করো অসুর নত্য লীলা
সংশপ্তক দেখে নিতে চাই জীবনের শেষ খেলা।কোটি কোটি হাত এক হাত হয়ে বাজাই মুক্তিবীণ
করি রাহুগ্রাস হরি রাহুত্রাস নির্ঘাত হবে লীন।
অতীতের কথা অতীতের ব্যাথা ভুলে যাবার নয়
সেই বিষ আজও বাংলার বায়ু করেছে বিষাদময়।
এখনই কবিতা লিখার সময়।

এসো দল,মত নির্বিশেষে মিথ্যাকে করি ম্লান
ফাঁসির মঞ্চে দাড়িয়ে গাই জীবনের জয় গান।
তবু দীপ্ত আলোই যাক ভরে যাক সবুজের প্রান্তর
সত্য দিয়ে শুদ্ধ  হোক মানুষের প্রতি অন্তর।
যদি আমাদের ত্যাগে শান্তি আসে তবেই ভাগ্যময়
মানুষের তরে দেশের তরে কামনা পূণ্যময়।
এখনই কবিতা লিখার সময়।

রচনাকালঃ১২/১০/১৮ খ্রিঃ

৪০

বয়সের ভাবনা
মনির হোসাইন
_______________
এ দূরন্তপনা বয়সে আমি ভাবতে শিখেছি।
বয়স এত বেশি হয়নি আমার।
কিন্তু একটার পর একটা ঘটে যাওয়া ঘটনা আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে।
যে বয়সটাতে আমার দিগন্ত থেকে দিগন্তে
ছুটে পালাবার কথা,
যে বয়সের টানে অসংখ্য মানুষ কূল হারিয়েছে,
সে বয়সে এসে আমি সত্য আর সুন্দরের পথে হাটতে শিখেছি।

আমি এখন ভাবি আর ভাবি
এবং দেখতে পাই
কোলাহল পূর্ণ শহরে রিক্ততার ছাপ।
মসজিদে আজান হয়,
মন্দিরে পুজো হয়,
আর গীর্জাতে হয় খ্রিস্টের বন্দনা।
কিন্তু আমি আজও শূনতে পাই
আহত পাখির ঝাপটানো পাখার শব্দ।
এখনো রাতের অন্ধকারে
কত জীবনের ছন্দপতন ঘটে!
স্তব্দতার দেহে একটি আর্ত চিৎকার!
আমাকে বাঁচাও!!
আবারো ফিরে আসে স্তব্দতা,
আরো ঘন কালো চাদরে ঢেকে যায় চারিপাশ।
আমি নির্লজ্জের মত উজ্জ্বল আলোতে ঘুরে বেড়াই।
এখন ভাবতে আর লিখতে পারা ছাড়া আমার আর কিচ্ছু করার নেই।
রিক্ত হস্ত প্রসারিত করে আমার কি করার আছে?
কিন্তু আমি একেবারে শূণ্যও নই।
আমার দু'টো অস্ত্র আছে।
একটি আমার কলম
আর অন্যটি আমার ভালবাসা।
যে অস্ত্র উত্তোলতি হলে
বিষাক্ত মসনদ ভেঙ্গে যেতে পারে।
কঠিণ হৃদয় গলে যেতে পারে।
আর রক্তে আমার উম্নাদ এসে গেলে
বিষাক্ত বায়ু প্রকম্পিত হবে।
বিস্তৃত হবে মহাসত্যের তরঙ্গমালা।
সমস্ত আগাছা জলে ভেসে যাবে।
জালিমেরা লীন হবে মহাকাল শ্রোতে।
এ আকাশ দুষণমুক্ত হয়ে
বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহিত হবে প্রান্তরে।
থেমে যাবে রক্তের হলিখেলা,
ডানা ভাঙ্গা পাখি আবার উড়বে আকাশে,
জনতা প্রশান্তিতে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেবে।
এ বয়সে  আমি এটাই ভাবতে শিখেছি।
আর নিজেকে শপেছি শপথের কোলাহলে।
রচনাকালঃ২০/১০/১৮ খ্রি

৪১

শিল্পীগণ
মনির হোসাইন
_____________
একজন কবি
একটি কলম
একটি শুভ্র শূণ্য খাতা
শত সহস্র যোদ্ধার নির্মাতা।

একজন বক্তা একটি মঞ্চ
জনতার উপচে পড়া ভীড়
বাক্যবানে অগ্নি ঝড়ায়
বিপ্লবী মহাবীর।

একজন সৈনিক তার সত্য
আর শপথ বাক্য পাঠে
মানুষের তরে দেশের তরে
জীবন বিলায় মাঠে।

একজন শ্রমিক কিছু উপাদান
তার কঠোর পরিশ্রমে
গড়ে ওঠে কত শিল্প
তার রক্ত মাংস ঘামে।

একজন কৃষক কিছু বীজ
একটি পরিত্যক্ত জমি
হাতের ছোঁয়ায় পরিণত হয়
উর্বর এক ভূমি।

একজন সত্যবাদী,মহাসত্য
জালিমের তরে পীড়া মহাহুংকার
অবিধান সব বিধানে আনে
সত্যাশ্রয়ী সরকার।
১৮/৯/১৮

৪২

অলস
মনির হোসাইন
___________
যদি পড়ি বাংলা
হয়ে যাই পাগলা।
যদি পড়ি ইংরেজি
মাথা খাই ডিগবাজি।
গণিতের গণ্ডগোল
হয়ে যায় তালগোল।
যদি পড়ি বিজ্ঞান
হয়ে যাই অজ্ঞান।
যদি পড়ি ভু-গোল
হয়ে যায় সব ভুল।
যদি পড়ি ইতিহাস
মনে হয় বনবাস।
যদি পড়ি গল্প
ঘুম আসে অল্প।
যদি যাই খেলতে
ঠেলা গাড়ি ঠেলতে,
সবে বলে কামচোর
আমি বলি রোদ্দুর।
অলসের কাজ নেই
অলসের লাজ নেই।
১৮/৯/১৮ খ্রি

৪৩

আমি কবিতার ফেরিওয়ালা
মনির হোসাইন
____________
এ দেশের মাটি ও মানুষ আমার চিরপরিচিত।
আমি এখানকার সবাইকে চিনি।ফসলের মাঠ,পুকুরের ঘাট,
শর্ষে ফুলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া
বাতাসের ঊর্মিমালা,
বিলের ধারে প্রস্ফোটিত লাল ও সাদা শাপলা ফুলের এক রাশ হাসি,
সাদা সাদা বকের ঝাক,
নলখাগড়ার ভেতর থেকে উঁকি মেরে থাকা বেগুনী রঙ্গের কালেম পাখিগুলোও আমার চির চেনা।
এরাও আমাকে জানে।
আমি গ্রামান্তরে বিচরণ করি বলে
এখানকার ঘাস-লতাপাতারাও আমাকে চেনে।
আমি এখানকার মানুষের রান্নার হাড়ি পর্যন্ত জানি।
দর্জায় দাড়িয়ে থাকা বৃদ্ধা এবং পুষ্টিহীন বালকের অপলক করুণ চাহনিটাও আমার কাছে অদ্ভুত!
আমি কবিতার দূরবীক্ষণ দিয়ে এসব পর্যবেক্ষণ করি।
তারা আমার কাছে কিছু চাইলে
আমি মুঠো মুঠো কবিতা বিলি করি।
কারণ,ওরা আমাকে জানে
আমি কবিতারর ফেরিওয়ালা।
চরম হতাশায় কবিতা তাদের আশান্বিত করলেও তেষ্টা মেটাতে পারে না।
স্বপ্নবাগ আজও পুষ্পশূণ্য।
মালিহীন পড়ে আছে গোলাপ,কামিনী
আমি সেই বাগানের সবকটাকে জানি

তারাও আমাকে জানে।
আমি কবিতার ফেরিওয়ালা।
রচনাকালঃ১০/৬/১৮

সুনামগঞ্জের সর্ববৃহৎ সামাজিক অনলাইন প্লাটফর্ম 'সুনামগঞ্জ ডটকম'

আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ, পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের একটি অন্যতম জেলা সুনামগঞ্জ এবং তার মাটি ও মানুষ। অন্যদের মত স...